নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় সংখ্যালঘুদের চলাচলের একটি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুল সংলগ্ন ছয়টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে সংখ্যালঘুদের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয় পঞ্চমীঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. বাতেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এ রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে ভুক্তভোগী সংকর রায় অভিযোগে উল্লেখ করেন।
সংকর রায়ের স্ত্রী কন্যা রায় জানান, আমাদের আসা যাওয়ার একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয় পঞ্চমীঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. বাতেন। এ রাস্তা দিয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমরা চলাচল করে আসতেছি। আশপাশে লোকজনও চলাচল করে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ আগে এ রাস্তা বন্ধ করার জন্য ইট দিয়ে দেওয়াল নির্মাণ করেন শিক্ষক আ. বাতেন। এতে বাঁধা দিলে আমাদেরকে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন এ শিক্ষক। তিনি আরো জানান, ২ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে এ রাস্তা খুলে দিবে না। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আ. রশিদ মোল্লার কাছে আমরা এ ব্যাপারে জানায়। এর কোনো সুরাহা না হলে আমরা সোনারগাঁও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সি মঙ্গলবার বিকেলে আমাদের রাস্তার ওপর দেওয়ালটি ভেঙে দেন।

এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, সংকর রায় ও আশপাশের কয়েকটি বাড়িঘরের আসা যাওয়ার একমাত্র পথ হল এ রাস্তা। গত ৩০ বছর ধরে চলাচল করে আসছে স্থানীয়রা। কিন্তু গত এক সপ্তাহ আগে এ রাস্তা বন্ধ করে দেয় পঞ্চমীঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. বাতেন। তিনি সংকর রায়ের স্ত্রীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। নয়তো রাস্তার ওপর থেকে দেওয়াল ভাঙবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর কঠিন বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সি জানান, পঞ্চমীঘাট এলাকার সংকর রায়ের বাড়ির আসা যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী। বিষয়টি আমাকে অবগত করেন উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. সামসুল ভূঁইয়া। খুবই দুঃখজনক ঘটনা এটি। তিনি আমাকে এ রাস্তা ভেঙে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। এজন্য আমি মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়দের নিয়ে রাস্তা ভেঙে দেয়। এছাড়া আমি এক সপ্তাহের মধ্যে রাস্তা সংস্কার করে দিবো। যাতে চলাচলেরও কোনো অসুবিধা না হয়।
এ বিষয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. রশিদ মোল্লা বলেন, এ বিষয়টি তারা আমাকে জানান। আমি শিক্ষকদের বলেছি রাস্তা ভেঙে দিতে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আ. বাতেন বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আপনি এসে যাচাই করুন। পরে তিনি এ প্রতিবেধককে ব্যস্ত আছেন বলে পঞ্চমীঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-সভাপতির কাছে মোবাইল দিয়ে দেন।