Dhaka 1:01 am, Thursday, 30 October 2025
শিরোনাম:
বিএফআইইউ এবং আদালতের আদেশ অমান্য করে অবরুদ্ধকর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে হিসাব খোলায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের ট্রাম্প পরিকল্পনায় ভেটো জেলেনস্কির ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু সাংবাদিক তুহিন হত্যা মামলার চার্জশিট ১৫ দিনের মধ্যে: জিএমপি কমিশনার ছাত্রদলের কমিটির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে: শিবির সেক্রেটারি নির্বাচন সিস্টেমের উপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে : সিইসি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানুষের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব: তারেক রহমান তারেক রহমান আমাদের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল গণপূর্ত প্রকৌশলী ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর আব্দুল্লাহ্ আল মামুন তারেক রহমান সর্ম্পকে কুটক্তি মন্তব্য করেও বহাল তবিয়তে টেন্ডার বানিজ্যে গণপূর্তে ছাত্রলীগেই আস্থা, হাজার কোটির টেন্ডার বানিজ্য করতে ভোলা থেকে রাঙ্গামাটি যাচ্ছেন রিজু

ভৈরবে বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

সময় পোস্ট: কম খরচ, কম পরিশ্রমে বেশি ফলন এবং বাজারদর ভালো থাকায় বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে ভৈরবের কৃষকদের। ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে বাদামের চাষ। এখানকার উৎপাদিত বাদাম উন্নতমানের হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা আছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

কৃষকদের দাবি, উৎপাদন খরচের চেয়ে বাজারদর কম হওয়ায় কয়েক বছর ধরে বোরো ধান চাষে লোকসান গুনছেন তারা। অপরদিকে কম খরচ আর কম পরিশ্রমে বেশি ফলন হয় বাদামে। এমনকি বাজারদরও অনেক ভালো। তাই বাদাম বিক্রি করে অনেক মুনাফার কারণে আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চর এলাকার জমি মেঘনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত বেলে-দোআঁশ মাটির হওয়ায় বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চলতি বছর সাতটি ইউনিয়নের মানিকদি, মৌটুপী, মেন্দিপুর, আগানগর, শ্রীনগর, বধুনগর এলাকায় ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। প্রতি বছরই কৃষকেরা বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শসহ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের কৃষক নাজমুল মিয়া জানান, প্রতি বিঘা বাদাম আবাদে যেখানে তাদের খরচ হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা; সেখানে ছয় থেকে সাত মণ ফলনে ১৯ থেকে ২২ হাজার টাকা বিক্রি আসে। তাছাড়া বাদাম গাছ গরুর সুষম খাদ্য ও রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় তারা লাভজনক ফসল বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমি ৩ খানি জমিতে বাদাম চাষ করেছি। প্রতি খানি জমিতে ৫০০ কেজি বাদাম পেয়েছি। ধানের চেয়ে বাদামের দাম দ্বিগুণের বেশি থাকায় বাদাম চাষ করি। বাদাম চাষে খরচ কম হওয়ায় অনেক কৃষক চাষ করছেন। তা ছাড়া বাদামের গাছ গরুর সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’

ভৈরবের বাদাম ব্যবসায়ী মুসলিম মিয়া জানান, এখানকার উৎপাদিত বাদামের মান উন্নত হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা আছে। কৃষকদের কাছ থেকে বাদাম কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন। ভরা মৌসুমে প্রতি মণ বাদাম ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা দরে বেচাকেনা হয়। অফ সিজনে সেটি আরও ৮০০-৯০০ টাকা বেড়ে যায়।

তিনি জানান, বাদামকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে ১৫-২০টি প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল। ওইসব মিলে বাদাম রোদে শুকানো থেকে শুরু করে বাছাই করা পর্যন্ত পুরুষ কর্মীর পাশাপাশি কয়েকশ নারী কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এখানকার নারী কর্মীরা প্রতিদিন ৮০০-৯০০ টাকা রোজগার করে সংসারের সচ্ছলতায় ভূমিকা রাখছেন।

ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, বাদাম চাষে তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় ভৈরবে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা। এ বছর উপজেলায় ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। বাদাম চাষের আওতা বৃদ্ধি, ভালো ফলনের জন্য উন্নত বীজ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কৃষি বিভাগ স্থানীয় কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শসহ সহযোগিতা করছে।টহ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Update

বিএফআইইউ এবং আদালতের আদেশ অমান্য করে অবরুদ্ধকর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে হিসাব খোলায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ

ভৈরবে বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

Update Time : 01:20:51 pm, Saturday, 24 May 2025

সময় পোস্ট: কম খরচ, কম পরিশ্রমে বেশি ফলন এবং বাজারদর ভালো থাকায় বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে ভৈরবের কৃষকদের। ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে বাদামের চাষ। এখানকার উৎপাদিত বাদাম উন্নতমানের হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা আছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

কৃষকদের দাবি, উৎপাদন খরচের চেয়ে বাজারদর কম হওয়ায় কয়েক বছর ধরে বোরো ধান চাষে লোকসান গুনছেন তারা। অপরদিকে কম খরচ আর কম পরিশ্রমে বেশি ফলন হয় বাদামে। এমনকি বাজারদরও অনেক ভালো। তাই বাদাম বিক্রি করে অনেক মুনাফার কারণে আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চর এলাকার জমি মেঘনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত বেলে-দোআঁশ মাটির হওয়ায় বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চলতি বছর সাতটি ইউনিয়নের মানিকদি, মৌটুপী, মেন্দিপুর, আগানগর, শ্রীনগর, বধুনগর এলাকায় ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। প্রতি বছরই কৃষকেরা বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শসহ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের কৃষক নাজমুল মিয়া জানান, প্রতি বিঘা বাদাম আবাদে যেখানে তাদের খরচ হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা; সেখানে ছয় থেকে সাত মণ ফলনে ১৯ থেকে ২২ হাজার টাকা বিক্রি আসে। তাছাড়া বাদাম গাছ গরুর সুষম খাদ্য ও রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় তারা লাভজনক ফসল বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমি ৩ খানি জমিতে বাদাম চাষ করেছি। প্রতি খানি জমিতে ৫০০ কেজি বাদাম পেয়েছি। ধানের চেয়ে বাদামের দাম দ্বিগুণের বেশি থাকায় বাদাম চাষ করি। বাদাম চাষে খরচ কম হওয়ায় অনেক কৃষক চাষ করছেন। তা ছাড়া বাদামের গাছ গরুর সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’

ভৈরবের বাদাম ব্যবসায়ী মুসলিম মিয়া জানান, এখানকার উৎপাদিত বাদামের মান উন্নত হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা আছে। কৃষকদের কাছ থেকে বাদাম কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন। ভরা মৌসুমে প্রতি মণ বাদাম ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা দরে বেচাকেনা হয়। অফ সিজনে সেটি আরও ৮০০-৯০০ টাকা বেড়ে যায়।

তিনি জানান, বাদামকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে ১৫-২০টি প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল। ওইসব মিলে বাদাম রোদে শুকানো থেকে শুরু করে বাছাই করা পর্যন্ত পুরুষ কর্মীর পাশাপাশি কয়েকশ নারী কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এখানকার নারী কর্মীরা প্রতিদিন ৮০০-৯০০ টাকা রোজগার করে সংসারের সচ্ছলতায় ভূমিকা রাখছেন।

ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, বাদাম চাষে তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় ভৈরবে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা। এ বছর উপজেলায় ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। বাদাম চাষের আওতা বৃদ্ধি, ভালো ফলনের জন্য উন্নত বীজ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কৃষি বিভাগ স্থানীয় কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শসহ সহযোগিতা করছে।টহ