Dhaka 12:59 am, Thursday, 30 October 2025
শিরোনাম:
বিএফআইইউ এবং আদালতের আদেশ অমান্য করে অবরুদ্ধকর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে হিসাব খোলায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের ট্রাম্প পরিকল্পনায় ভেটো জেলেনস্কির ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু সাংবাদিক তুহিন হত্যা মামলার চার্জশিট ১৫ দিনের মধ্যে: জিএমপি কমিশনার ছাত্রদলের কমিটির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে: শিবির সেক্রেটারি নির্বাচন সিস্টেমের উপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে : সিইসি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানুষের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব: তারেক রহমান তারেক রহমান আমাদের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল গণপূর্ত প্রকৌশলী ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর আব্দুল্লাহ্ আল মামুন তারেক রহমান সর্ম্পকে কুটক্তি মন্তব্য করেও বহাল তবিয়তে টেন্ডার বানিজ্যে গণপূর্তে ছাত্রলীগেই আস্থা, হাজার কোটির টেন্ডার বানিজ্য করতে ভোলা থেকে রাঙ্গামাটি যাচ্ছেন রিজু

সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কোন জিনিসেরই সঠিক ওজন বের করা যায় না

রাজু আহমেদ মোবারক:

1)”Do not sacrifice the future to satisfy the present.”

— Herbert Harris

বায়ুর চাপ পরিমাপের জন্য বিজ্ঞানীরা ব্যারোমিটার ব্যবহার করে থাকেন। শব্দের তীব্রতা মাপার জন্য তারা অডিও মিটার ব্যবহার করেন।কোন জিনিসের ওজন মাপ দিয়ে এর সঠিক ওজন আছে কিনা তা বের করার জন্য প্রথম কথাই হলো যন্ত্রগুলো যেন সঠিক মাপন যন্ত্র হয়। ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আমরা যতই সাধনালব্ধ জ্ঞানে মহত্বর জীবন তৈরিতে প্রাণপণ চেষ্টাই করিনা কেন, সমস্ত কিছু বিলিয়ে দিলেও যদি আমাদের অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক না থাকে, কোন জিনিসেরই সঠিক ওজন আমরা বের করতে পারবনা। জীবনের মাপন যন্ত্র যা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্ব এসব যদি মূল্যবোধের আলোকে অন্তরে

তীব্রভাবে না থাকে, চিন্তার জগৎ থেকে অপরাধ কর্ম করার নেশা আমরা কিছুতেই কমাতে পারিনা। আমরা আমাদের জীবনে কল্যাণকর কাজ করার জন্য সঠিক ওজন বের করতে পারবনা যদি মানুষকে ভালোবাসার প্রাণ অন্তরের চেতনা থেকে অনুভূত না হয়। মানুষের মনুষ্যত্ব ও বিবেক নামক মূল্যবান সম্পদ যদি বিবেকহীন ও মনুষ্যত্বহীন থাকে, নিষ্ঠুরতার মতো কর্মকান্ড পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে স্বাভাবিক হতেও থাকে।। দেখুন না, মানুষই মানুষকে কত কষ্ট দেয়! মানুষই মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে! মানুষই মানুষকে তাদের লোভাতুর ও নিষ্ঠুর প্রাণকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যর্থ হওয়ার কারণে হত্যা করে ফেলে। অন্যের দ্বারা এই কষ্ট পাওয়া ও নির্যাতিত হওয়া মানুষগুলো এসব নির্যাকদের অত্যাচারে, উপদ্রবে, যাতনার তাপে ও চাপে তাদের হাসি মুখগুলো সারাক্ষণই যেন বিবর্ণ আকার ধারণ করে থাকে। মানুষের মুখের হাসি কেড়ে নিয়ে যারাই এই পৃথিবীতে সুখি হতে চায়, সুখের অনুভবে জীবন চালাতে চায়, তাদের মতো কপট মানুষ যেন পৃথিবীতে খুবই বিরল। এই কপট মানুষ যখনই তোমাদের পাশে আসবে, তোমাদের চরিত্র হরণে সার্বক্ষণিক ন্যস্ত হয়ে পড়বে। যারাই সত্য সুন্দরের সন্ধানের জীবনের পথ থেকে সরে যাবে, তাদের অন্তরের মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব সঠিক থাকবে না, কারণ তাদের বিবেকহীন, নিষ্ঠুর মানসিকতার নগ্নতার কারণে অন্তরের সৌন্দর্য্যের ভেতরের অংশ থেকেই তারা রুপহীন হয়ে নানান চরিত্রের রং ধারণ করে। এই পৃথিবীর রং বদলের অন্তরে সৌন্দর্যহারা মানুষগুলো তাদের জীবনে কোন কিছুরই সঠিক ওজন রাখতেও যেমন পারেন না, সঠিক ওজন ঠিক রেখে বন্ঠন পর্যন্তও করতে পারেন না। মানুষের মন যদি সংকীর্ণ হতে হতে সঠিক মাপন যন্ত্রের মূল শক্তির বিকাশ হারিয়ে ফেলে, তারা কখনোই তাদের চরিত্রের রুপ-কাঠামো ধরতেই পারবেনা। সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কোন জিনিসের ওজনই আমরা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারিনা, কারণ আমরা সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে আমাদের জীবনকে জীবনের মর্যাদা দিয়ে বিবেক বুদ্ধির উন্মেষ ঘটিয়ে চালিত করিনা। তুমি যতই অন্তরে সৌন্দর্যহীন মানুষ হবে ততই মানুষের প্রতি ভালোবাসার পরিবর্তে নিষ্ঠুরতার মতো জঘন্যতা তোমার নিজের অন্তরেই বৃহত্তর হতে থাকবে। সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষের যদি তুমি উপকারও করে থাকো তোমার জীবনে, তাদের অন্তরের বিশালত্বের অভাব ও অযোগ্যতার কারণে তারাই একদিন তোমাকে অযোগ্য মানুষ মনে করে দূরে রাখার প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করবে। তারা যে তাদের অতীতের জীবনে সংকীর্ণ পথ প্রান্তের মানুষ ছিলেন, সেসব তাদের মনশ্চক্ষে উদিত হলেও, সংকীর্ণ মানসিকতার কারণে সমস্ত কিছুই তাদের কাছে অতি সামান্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রতিভাত হবে। তোমরা কি জাননা? অযোগ্য মানুষের কল্যাণ সাধন করেও মানুষ মহা বিপদে পড়েন? কারণ, এই অযোগ্য মানুষ তখন তোমারই প্রতিযোগী হয়ে দূরদূরান্ত থেকে দূরন্তপণা মানুষ নিয়ে তোমারই ক্ষতিসাধন করবেন। মানুষের বিবেক বুদ্ধি ও মনুষ্যত্বের শক্তি যদি অন্তরের গভীরতা থেকে হৃদয়কে নাড়া দিতে না পারে, সেই সমস্ত মানুষেরা জীবনে যত কাজই করে থাকুক না কেন, কিছু না কিছু কলহ-বিবাদ ঘটিয়েই সেই সমস্ত কাজগুলো করে থাকেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে। আজকের দুনিয়ায় পরিবারে পরিবারে, সমাজে সমাজে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সম্পর্কহীনতাই ত্বরান্বিত হচ্ছে অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক না রাখার কারণে। আপন মানুষও যেন আপনার কাছ থেকে দূরেই চলে যাচ্ছেন। অন্তরের মাপন যন্ত্রখানি সঠিক না থাকার কারণে মায়া মমতার মতো মূল্যবান উপাদানগুলোও অন্তর থেকে তিরোহিত হচ্ছে। ফলে অমানবিক কাজও যেন স্বাভাবিক হচ্ছে সর্বক্ষেত্রেই। কখনো কখনো আমরা পরিবারছাড়া, দলছাড়া ও গোত্রছাড়া মানুষে পরিণত হয়ে যাই সম্পর্কের মাঝে বাঁধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা না হওয়ার কারণে। আমরা যারাই সম্পর্কে বাঁধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষের সাথে, আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির বিকাশও যেন বাধাগ্রস্তই হচ্ছে। আমরা আমাদের জীবনকে যদি ধারাবাহিক উপলব্ধির শক্তির বিকাশের ওপর ভর না করাতে পারি, আমরাই আমাদের সুন্দর চরিত্র গঠনের মূল শক্তি থেকেও নীরস প্রাণের মানুষে পরিণত হয়ে যেতে পারি। কোন সুন্দর জিনিসই যদি তোমার সুন্দর প্রাণ পরশে এসে আপন গতিতে স্হান করে নিতে না পারে, তুমি কিছুতেই পরের জন্য প্রিয় মানুষ হবে না, কারণ তুমি তোমার সঠিক মাপন যন্ত্রের বিবেক ও মনুষ্যত্বের মতো শ্রেষ্ঠ সম্পদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কোন চেষ্টাই তুমি করোনি। কারণ, সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে জীবন পরিচালিত করে অন্তরের মাপন যন্ত্রখানি সঠিক রাখার

কোন সিদ্ধান্তই তুমি জীবনে গ্রহণ করোনি।

2) “Nobody makes a greater mistake than he who did nothing because could only do a little.”— Edmund Burke

বুদ্ধিমান মানুষেরা জীবন চলার পথে অনেক কিছুতেই ধুম্রজাল পরিস্থিতির মধ্যেও পড়েন, কিন্তু চিন্তা চেতনায় অতি শিক্ষিত পন্ডিত মানুষ হওয়ার জন্য দিবারাত চিন্তা ব্যয় করে পরিশেষে প্রতি কথা ও কর্মে নিজেকে মূল্যহীন পরিচয়ে পরিচয় দিয়েও থাকেন, তা-ই তখন আমাদের কাছে দুঃখের ও অসন্মানের হয়ে পড়ে। আমরা শিক্ষিত পন্ডিত মানুষ হয়ে যদি নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করে না চলতে পারি, “শিক্ষা” নামে যে শব্দটি আছে, সেই শিক্ষা শব্দটিরও মর্যাদা আমরা হেয় করেও চলি। আমরা আমাদের সুন্দর জীবনের প্রয়োজনেই সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে সঠিক মাপন যন্ত্রের দিকেও মনোযোগ আকর্ষণ করি। আপনারা যারাই চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ-হত্যাকান্ড এসব নিষ্ঠুর কর্মকান্ডের সাথে নিজেদেরকে নীরবে বা প্রকাশ্যে সংশ্লিষ্ট করে রাখেন,

অন্তরের সঠিক মাপন যন্ত্রখানির দিকে একটুও যদি দৃষ্টিদান করে চলেন, কিছুই না কিছু অপরাধ ও পাপ কর্ম কম করারও প্রাণ পাবেন।

আপনি আজ থেকেই আপনার অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক রাখার জন্য অভ্যেসে মনোযোগ প্রদর্শন করুন, শেষ বয়সে পাপের বোঝাটা এত ভারি মনে হবেনা! আমাদের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা যত কিছুই করি আমরা যেন জীবনের মর্যাদা রক্ষা করে চলি। আমরা আমাদের চলন্ত জীবনে যদি বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের শক্তির ওপর দন্ডায়মান না হতে পারি, আমরা কিছুতেই আমাদের নিজেদের জীবনের সঠিক মাপন যন্ত্রটি পর্যন্ত যত্ন করে সংরক্ষণ করে রাখতে পারিনা। আমরা মনুষ্যত্ব ও বিবেকের উৎকর্ষতার কথা সর্বসময়ই বলে থাকি, কিন্তু তা যেন আমাদের অন্তরের গভীরতা থেকে বেরও হয়ে আসে। আপনার-আমার অন্তরের সৌন্দর্য রক্ষিত করার জন্য যাতে আমাদের দ্বারা মানুষ অপমানিত না হয়। আমাদের নিজেদের সুন্দর জীবনের মর্যাদা রক্ষা করে চলার জন্য অন্তরের গভীরতা থেকে মর্যাদা রক্ষার কোন ধারণাই না থাকে, আমরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সন্মানিত মানুষ হই কেমন করে? আমরা যদি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সন্মানিত মানুষও হতে চাই তাহলে এই একটা কাজ যেন

সর্বসময়ই করি। আর সেটা হলো গৃহের সৌন্দর্য-রুপ-ঐশ্বর্যের মর্যাদা রক্ষা করে চলার জন্য দিবারাত উদ্যানের যত্নের মতোই পরিপূর্ণ মন নিয়ে যত্ন করে যাই। আপনার-আমার উদ্যান যদি নিয়মিত পরিচর্যা না করি, একটা সময়ে দেখা যাবে আমাদের সমস্ত উদ্যান আগাছায় ভরে গিয়ে জীর্ণ-মলিন হয়ে পচে গেছে। আমাদের পরিবার নামক সুন্দর বাগনানটি যেন অযত্ন, অবহেলায় বাগানের আগাছার মতো কিছুতেই জীর্ণ ও মলিন না হয়ে যায়। এই পৃথিবীতে যত প্রকার প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা মানুষের কল্যাণে আসে, সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠানই হলো আমাদের পরিবার। চলুন, আমরা পরিবারের যত্ন করি এবং পৃথিবীতে ভালো মানুষ তৈরি করি। যাতে ধর্মনীতি-রাজনীতি-অর্থনীতি-সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রভাব প্রতিপত্তি সৃষ্টিতে আমরা কখনোই মানুষকে হত্যা না করি। তোমার বিবেক বুদ্ধি মনুষ্যত্বের শক্তির বিকাশের যদি অভাব থাকে, তুমি কখনোই তোমার অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিকভাবেও কাজ করবেনা, কারণ তুমিও এই পৃথিবীর একজন বিবেকশূন্য মানুষ। আমরা যদি আমাদের পরিবারের যত্ন না করি এর মর্যাদা রক্ষার জন্য। এই পারিবারিক সুন্দর বাগান থেকেও চোর-ডাকাত-

দুর্নীতিপরায়ণ এমন কি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নিয়োজিত হয়ে মূর্খ মানুষও বেড়ে গিয়ে বের হতে পারে। আপনারা হয় তো বলতে পারেন বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন জাতির মাঝে যুদ্ধবিগ্রহের মাধ্যমে মানুষের মৃত্যু, দেশ দখল সবই প্রভাবশালী শিক্ষিত মানুষেরই কাজ। সুতরাং ওরা মূর্খ মানুষ হতেই পারেনা? আপনারা কি জানেন?”এরা মূর্খদের মূর্খ বলেই মানুষ হত্যা করেন! দেশ দখল করে সারা পৃথিবীকে অবাসযোগ্য করে রাখাই তাদের কাজ। তাদের কর্মকান্ডের চরম কদর্যতার চিত্র সকল স্হানের, সকল দেশের মানুষেরা দেখেই চলছেন। তারা তাদের খারাপ কাজে অন্তরে ঘৃণা ও অপমানবোধ করেন না বলেই সঠিক মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব এসব মূল্যবান উপাদানগুলোর মূল্যই হৃদয়ের অনুভূতিতে অনুভব করতে পারেননা, কারণ আপনার-আমার অন্তর থেকে যদি অন্যকে বাতিদান করার মতো বিবেক ও মনুষ্যত্বের চেতনা বোধের মতো চমৎকার অনুভূতি অন্তর থেকে বাহিরে না আসে অন্যদের দুঃখ দেখে, আমি-আপনি কেউই অন্যের জীবনে বাতিদান করতে পারবনা। যারা ধর্মকর্ম ও পূণ্যের কাজ করার পরও অন্তর থেকে যে বিবেকবোধ ও মনুষ্যত্বের মতো শ্রেষ্ঠ অনুভূতিবোধ সৃষ্টি হয়, তা যদি অন্তরে ধরে রেখে অপরাধ কর্ম প্রতিরোধ করার প্রাণ তৈরি না করেন তারাই নির্মম, পাষাণ ও নিষ্ঠুর। আমার-আপনার অন্তরের ভেতর যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে জীবন চালিত করার বোধশক্তি না থাকে, আমরা কখনোই বিবেকবান ও মনুষ্যত্বের বিকাশে সঠিক মাপন যন্ত্র সেটির সম্পর্কেও ধারণা পোষণ করা দূরহ হয়ে পড়বে। তোমার অন্তরে যদি অপরের ধন-সম্পদ লুন্ঠন করে নিজের ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে সমাজ ও রাষ্ট্রের বৃহত্তর শক্তির দাপটে আতংক সৃষ্টিকারী মানুষ হতে চাও, তোমার লোভ লালসার নগ্নতার রুপটি তোমার ছোট্ট জিহ্বাকে অগ্নিস্ফুলিংগের মতো অগ্নিজিহ্বায় রুপান্তরিত করবে, কারণ মানুষের মনুষত্ব ও বিবেক যদি নিষ্ঠুরতার চরমে পৌঁছে যায় হৃদয়ের অগ্নিস্ফুলিংগের কারণে,

এই ছোট্ট অর্গান জিহ্বাহও লোভ-লালসায় নিমজ্জিত হয়ে অগ্নিজিহ্বাতে রুপ লাভ করে। আমাদের অগ্নিজিহ্বা সারা পৃথিবীকেও নাড়া দিতে পারে। কোন ধর্ম গ্রন্থের শাস্ত্রীয় কথাবার্তা যদি তোমাকে

অনুমোদন দিয়ে থাকে যে, মানুষের কোন আচরণ ও চিন্তা যদি শাস্ত্র বিরোধীও হয়ে থাকে, আর এই জন্য তাদের হত্যা করে জান্নাতে যেতে পারবে। আর তা যদি বিশ্বাসও করে থাকো তোমার মতো বোকা ও

অপদার্থ মানুষটি কোটি বছরে একটিও খোঁজে পাওয়া ভার হবে, কারণ আমাদের সৃষ্টিকর্তা কারো দ্বারা সৃষ্ট হত্যাযজ্ঞের রক্তপ্রবাহ দেখতে চাননা! এই অগ্নিস্ফুলিংগের অগ্নিসংযোগ যেমন মাটি-গাছ, পাহাড়-পর্বত, নদী-সাগর সমস্ত কিছুইকে ধ্বংস করে দিতে পারে নিমেষের মধ্যেই। ঠিক তেমনইভাবে অগ্নিজিহ্বার শক্তিও সমগ্র বিশ্বের মানুষকেও চিন্তা চেতনায় বিচ্ছিন্ন করে বড় ক্ষতিসাধনও করতে পারে। আমরা যখনই কোন কথা বলি, আমাদের জিহ্বা যেন অগ্নিসংযোগ করার মতো অগ্নিজিহ্বাতে পরিণত না হয়। আমাদের মূল্যবান এই অর্গানটি যারাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি, অনেক ক্ষেত্রেই আপন মানুষের আপন প্রাণ পুড়ে ছাইও হয়ে যেতে পারে। আমরা বাহিরের মানুষের অগ্নিজিহ্বায় যতটা না কষ্ট পাই এবং সেই কষ্ট থেকে যাতনা পেয়ে যে ক্ষতিগ্রস্ত হই, আপন মানুষের অগ্নিজিহ্বার আঘাত পেয়ে তার চেয়েও বেশি দুঃখাতুর ও ব্যথাতুর প্রাণের মানুষ হই।

3) “Success is a number game. The more you call, the more likely you are to get a yes.”— Roi Tauer

তুমিই বল তুমি সৎ মানুষ না কী অসৎ মানুষ তোমার জন্মে? কোন সত্য ঘটনা বা বিষয়কে তুমি সত্য হিসেবে জানার পরও যদি তুমি সেই সত্যকে সত্য বা সেই ঘটনাকে সত্য ঘটনা হিসেবে মেনে নিতে না চাও, তখনই তুমি অসৎ মানুষ হিসেবে তোমার চরিত্রের রুপ-কাঠামো প্রকাশ করে গেলে এই পৃথিবীতে। পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে মূল্যবোধের একটি অধিকার থাকে। তাও বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির শক্তি থেকে নিখুঁতভাবেই বের হয়ে আসে পরস্পর পরস্পরের মধ্যে প্রাণের সম্পর্ক থাকার কারণে। যাকে তোমার ভালোবাসা ও প্রাণের টানে প্রেমদীপ্ত হৃদয়ে ভালো না লাগে, পরস্পর পরস্পরের মাঝে অনুভূতির টানে অধিকারের চাহিদাও হ্রাস পেতে থাকে। সংসারেই হোক, সমাজেই হোক পরস্পরের সম্পর্কের মাঝে যদি মধুরতার বন্ধন তৈরি না হয় হৃদয়ের পরম ভালোবাসার প্রাণে, তখন পরস্পরে খাঁটি অধিকার প্রতিষ্ঠা পায় না। তোমার-আমার ঘর সংসারেও স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্তদির মাঝে পরস্পর পরস্পরের মাঝে স্বাভাবিক অধিকার থাকে। সেটিও যদি মর্যাদা রক্ষার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরে হৃদয়ের ঘাটতি থাকে, মুখের ও

হৃদয়ের প্রসন্নতায় সমস্ত ঘর আনন্দে ভরে উঠেনা। আমরা আমাদের মনকে যদি সত্য বলয়ের স্থিরকৃত স্হানে না রাখার চেষ্টা করি, আমরা যেন ভাঙ্গাচোরা প্রাণের অস্থির প্রাণের মানুষ হয়ে থাকি। এই অস্থির প্রাণের মানুষেরাই সমাজের মায়া ছেড়ে দিয়ে নিজেদের মায়া করতে গিয়ে পুরো সমাজের চলনসই পথটাকেও অচল করে ফেলেন, কারণ তারা সমাজের উন্নতির মায়া ছেড়ে স্বার্থপর মানুষে পরিণত হয়ে যান।

তাদের নষ্টতার চরিত্রই সমাজ ও রাষ্ট্রকে তখন ভঙ্গুরতার দিকেই ধাবিত করে। সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কোন জিনিসেরই সঠিক ওজন যেমন

বের করা যায় না তা যেমন সত্যি, সত্যের দৃঢ়তা ছাড়া সত্য পথে মনও রাখা যায় না। সত্য পথে আরোহণে তুমি তোমার জীবনকে চলমান রাখার জন্য অন্তরের যত্নের কোনই ঘাটতি যেন না ঘটে। আমরা যদি সুরা সেবন করে সুরা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকি, সেই নেশাগ্রস্ততার প্রভাবে যদি চৈতন্যহারা মানুষে পরিণত হয়ে যাই, সেই নেশার ঘোর না কাটা পর্যন্ত শরীরের আসল চেতনাবোধটিই বা কি তা আমরা কখনো ঠাহরও পাইনা। ঠিক তেমনইভাবে আমরা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের মূল শক্তি থেকে বিচ্যুত হয়ে এর নিখুঁত রুপটি ধূসর বর্ণে পরিণত করি, তখনই আমরা আমাদের অন্তরের মাপন যন্ত্রখানিও নষ্ট করে ফেলি। তুমি যদি মানবিক চিত্তের মানুষ না হও, তোমার অন্তরে দুঃখে থাকা মানুষের প্রতি দুঃখাতুর প্রাণের সঞ্চার হবে না, কারণ পরের জন্য দুঃখ পেয়ে ব্যথাতুর প্রাণের অনুভূতি তোমার অপরাধ কর্মে তা নষ্ট করে ফেলেছে। সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কিছুতেই যেমন কোন জিনিসের সঠিক ওজন নির্নায়ণ করতে চাইলেও আমরা করতে পারিনা। ঠিক তেমনই তোমার দান করার হৃদয়ের পরিসর বড় না করে, তুমি কাউকে কিছু দান করার উৎসাহিত শক্তি উৎসারিত করতে পারবেনা হাতে তুলে দান করার জন্য। চোখের জ্যোতিও প্রখর করা যায় না যদি পরকে সেবাদানে তুমি অন্তরে সঠিক মানুষ না থাকো। আমরা আমাদের হাত ও চোখ দুইটিকে ঠিক করার আগে যেন আমাদের ভেতরের মাপন যন্ত্র অন্তরকে ঠিক করে নিয়ন্ত্রণে রাখি, কারণ তোমার-আমার অন্তর যদি নিয়ন্ত্রণহীন থাকে, এই অন্তর ভালো কিছু করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেনা। তোমার অন্তরে যদি হৃদয়ের বোঝাপড়া হৃদয়ে না থাকে, তোমার হৃদয়ের বোঝাপড়ার প্রাণ থেকে মহা অনুভূতির প্রাণ সৃষ্টি

হবেনা অন্যের দুঃখ দেখেও, কারণ তোমার হৃদয়ে তুমি নিজেই বিষাক্ত জিনিস স্তুপীকৃত করে তালাবন্ধ করেছো। তোমরা যদি সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীর দিকে তোমাদের অন্তহৃদয়ে তাকাতে পারো, তোমাদের পবিত্র হৃদয় খুলে দেখতে পাবে কোথাও না কোথাও এই বিষাক্ত মানুষের বিষাক্ত হৃদয়ের বিস্ফোরণ হয়েই চলছে। জখম হাত ও যখম চোখ দিয়ে কোন জিনিস ঠিক মতো ধরা ও দেখা যায় না। যখম হৃদয়ে তুমি মানুষের কল্যাণে কোন কিছুই করতে সক্ষম হবে না। আমরা মানুষ হয়ে যদি মানুষের মর্যাদা দিয়ে আমাদের জীবন পরিচালিত না করে চলি, এই আমাদের হৃদয়ে নেশাগ্রস্ত লোকজনদের মতোই নেশার ঘোর ধরে হৃদয়কে ভারী করে রাখে। ফলে সেসব হৃদয়ে আমরা মানবিক কোন কাজই করতে পারিনা। সত্যকে আমাদের অন্তরে আপন গতিতে চলার জন্য হৃদয়ানুভূতির প্রাণ সঞ্চারণের মাপন যন্ত্র না থাকে, আমরা কেমন করে ন্যায় অন্যায়ের বিচার্যের সত্য পথের মূল ধারাতে থাকি? এসব চরিত্রহীন নিষ্ঠুর মানুষের দ্বারা সংঘটিত যারা সর্বস্ব হারিয়ে যাতনার ভারে আর্তনাদ ও আর্তচিৎকার করে অশ্রুপ্লাবিত করেন তাদের পবিত্র মুখমন্ডল আমাদের বিবেক শূন্যতার কারণে। এই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য যদি আপনার-আমার অন্তরের দাড়ি-পাল্লার মতো মূল্যবান সঠিক মাপন যন্ত্রটিকে জীবনে সত্য পথে চলার জন্য সঠিক মাপন যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত করে না চলি, একদিন হয় তো দেখা যাবে আমরা যেন শুধুই এই পৃথিবীতে অকর্মণ্য মানুষ হিসেবে হাঁটা-চলাফেরা করে সময় ব্যয় করে গেলাম কিছু সমমনা মানুষের সাথে, কিন্তু জীবনকে জীবনের মর্যাদার আলোকে উপলব্ধিটুকু যেন করা হলো না অন্তরের সৌন্দর্যের স্বরূপকে ধারণ করে! আমরা যখনই অন্তরের চেতনার শক্তি থেকে বিলুপ্ত হয়ে চিন্তায় অপরাধ কর্মের সাথে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে সম্পৃক্ত হয়ে কেবলই চেতনায় অন্ধকারের দিকে যেতে থাকি, শতশত বা হাজার হাজার বার অপরাধ কর্ম সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীতে সংঘটিত হতে থাকলেও আমরা আমাদের চোখ ও হৃদয় খুলে দেখতেও চাই না। এমন কি ঘটনার আসল ঘটনা কি তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতেও চাই না, কারণ কখনো কখনো অন্যায়-অপরাধ-পাপ কর্মও আমরা নানা অজুহাতে মেনে নিয়েও চলি। আমরা যদি সত্য পথে আমাদের মনটি রাখি, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কথাও বলতে শিখি।

4)”Children are likely to live up to what you believe in them.”

— Lady Bird Johnson

সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে যে জীবন সেই জীবনই একমাত্র মানবিক জীবন হতে পারে, কারণ সত্যনিষ্ঠ ও সত্যান্বেষী মানুষ যদি তুমি না হতে পারো, তোমার দ্বারা তোমার ভেতর থেকে অন্তরের চোখ খোলা সম্ভব নয়। আমরা ধর্মকর্মের সাধনা দ্বারা যতই পরকালের সর্বোচ্চ মর্যাদার স্হানে আসীন হতে চাই না কেন, হৃদয়ের পরিসর বড় না করে অন্তরে তীব্র চেতনা জাগ্রত হয় না মানুষকে ভালোবাসার জন্য। তুমি-আমি কেউই মানুষের সর্বনাশ করে তাদেরকে অন্ধকার পথে নামিয়ে দিয়ে এবং তাদের বাতিদানের আলোকিত ঘর অন্ধকার করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়া সর্বোচ্চ স্হানে সমাসীন হওয়া কিছুতেই যে সম্ভব হবে না তা আমাদের বিবেক বার বারই বলে দিয়ে যাচ্ছে। তোমার কোন ধর্মগ্রন্থও যদি বলে দেয় যে, মানুষকে রক্তাক্ত ও হত্যা করে পরকালে জান্নাতে যাওয়া যাবে, সেসব ধর্মগ্রন্থ পৃথিবীর মানুষের শান্তি নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে ভালো কাজ না করি, সঠিক মাপন যন্ত্র অন্তরে অন্তরিত করে, আমাদের চিরজনমের সাধনা শূন্যতায় নিক্ষিপ্ত করে আমরা যেন অজানা দূরত্বে যেতে যেতে শুধুই পাপ সঞ্চয় করে দুর্বল মানুষে যেনই পরিণত হলাম। তোমরা যখনই অন্যের বাড়িঘর নষ্ট করে তোমার নিজের ঘরে আলো জ্বালাবে, সেই আলোও একদিন তোমাদের সমস্তের হৃদয়কে পুড়ে ছাই করে ছাড়বে, কারণ শক্তির ধর্মানুসারে তুমি যা করবে যেভাবে, সেই রুপে সরাসরি না হোক, অন্য কোন রুপে, অন্য কোন শক্তিতে হলেও তোমাকে এসে সেই আঘাতটা করবে। সেই আঘাতের অপশক্তি তোমারই দ্বারা সৃষ্ট বলেই, তোমার সৃষ্টির শক্তি তোমাকেই অনুসরণ করবে তোমার অনুসারী হিসেবে। এই স্বল্প সময়ের জীবনে যদি আমরা মানুষ হিসেবে জীবনের মাপন যন্ত্রটি সঠিক না করে পাপ, অপরাধ, লোভ-লালসা আর নিষ্ঠুর কর্মকান্ড করে অমানবিক ও পচনশীল সংক্রমণ রোগীর মতো মানুষ হয়ে যাই, যেখানে মানুষ আমাদের স্পর্শ পেতেও তাদের অন্তরে স্পষ্টভাবে ভয়ের সঞ্চার হতে থাকে। সেটাই আপনার-আমার জীবনে ভারী নিঃশ্বাসে পরিণত করে জীবনের মূল্যবান সৌন্দর্য হরণও করতে

পারে। আমরা যখনই অন্তরের চোখ খুলে খুলে জীবন চালিত করে চলি, আমাদের অন্তরের সঠিক মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব সঠিক স্হানে বসানো সম্ভব হবে। আমরা যদি আমাদের অন্তরের বোধশক্তিকে বিকশিত করতে না পারি, আমাদের সঠিক মাপন যন্ত্রখানিও বোধের চেতনাকে অনুভব করতে পারে না, কারণ আমরা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির বিকাশ যদি অন্তরে অহরহ বিরাজমান না থাকে, সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীতে নিষ্ঠুর কর্মকান্ড সংঘটিত হতে থাকলেও আপনার-আমার মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব অন্তরে অগ্নিস্ফুলিংগের মতো আপনা থেকে বিস্ফোরিত হবে না। একটি কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, আমরা যদি কোন বিষয় বা কোন জিনিস না জানি, সেই অজ্ঞতার বেড়াজালে নানা অসঙ্গতি ও নানা ধরনের অমূলক ক্ষতিকর জিনিস ভেতরে ভেতরে রয়ে যায়। তা কিন্তু জানার আগ্রহ না থাকার কারণে আর জানা যায় না। যে জিনিস আমরা জানতে পারি না, সেই অজানা বিষয়ের খারাপ প্রভাব থেকে আমরা মুক্তিও পাই না। যে কোন জিনিস জানার মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের জীবনে মানসিক শক্তি বৃহত্তর করে সমাজ ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হয়ে থাকি। কিন্তু আমরা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের চেতনায় যদি নিজেদেরকে উর্ধ্বে স্থানান্তরিত না করি, আমাদের জীবনে যা কিছুই আমরা অর্জন করি সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া, আমাদের চিন্তা যে দিকে খুশি সে দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে কোথাও আমরা খাঁটি মানুষটিও হতে পারিনি। যুগে যুগে পৃথিবীতে মানুষই মানুষের ক্ষতিসাধন করে মূর্খতা ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে, এখনও দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের প্রতি মানুষের নির্মম নিষ্ঠুরতা, অবহেলা, রক্তাক্ত যুদ্ধে মানুষের রক্তে রক্তাগঙ্গা বয়ে গেলেও, সেই রক্তের উপর দিয়ে হেঁটে গেলেও, তাদের চোখের জলেও তাদের কোন দয়া মায়া নেই। এরা যে জাতি গোষ্ঠীর মানুষই হোক এরাই নিষ্ঠুর ও পাপী। এই বিধাতার রাজ্যে যারা তোমাদের ঘরের আলো নিভিয়ে দিয়ে তোমাদেরকে অন্ধকার ঘরে রাখে। যারা তোমাদের ঘরের আলো নিভিয়ে তাদের ঘরে আলোকরশ্নির বিচ্ছুরণ ঘটায়, বিধাতার কাছে তোমরা কি একটু নালিশ করে বলতে পারো না ওরা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মানুষ? তাদেরকে কোন্ কথাটি বলে বিধাতাকে বুঝাতে পারবে যে এরা পৃথিবীর নিষ্ঠুর মানুষ? আমাদের বিধাতার কথা কেউ এখন আর শুনেন না! অধিকাংশ মানুষই যেন বিবেক ও মনুষ্যত্ব নামে মহত্বর

উপাদানগুলো অন্তর থেকে চিরতরেই বিদায় করার প্রতিযোগিতায় আছেন, কারণ বিবেক বুদ্ধি ও মনুষ্যত্বের বিকাশ অন্তরে বাঁচিয়ে রেখে অপরাধ কর্ম আর পাপ কাজ করাই যায় না! যারাই নিষ্ঠুরতার মাঝে জীবনকে সম্পৃক্ত রেখে লাখ-কোটি বার মসজিদ-মন্দির-চার্চ-পেগুডায় গিয়ে পূণ্যলাভে সময়াক্রান্ত করলেও আমার-আপনার সন্তানদের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত শরীরের বিভস্ব চিত্র চোখের জলে আমাদের বুক ভেসে যাচ্ছে। তোমাদের অন্তরে কি এতটুকু সংশয়ী

মানসিকতা উদ্রেক হয় না যে, পাষাণ হৃদয়ের মানুষেরা যারা চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ আর মানুষ হত্যা করে ধর্মালয়ের ধর্মাশ্রমে নিয়োজিত থাকলেও কোন পূণ্যের স্পর্শ এই পাপী অপরাধীদের অন্তরে সৃষ্টিকর্তা পৌঁছাবেন না? আমরা সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে যদি সঠিক মাপন যন্ত্রের নিরক্ষণে বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের শক্তির দ্বারা ভালো

মানুষ না হচ্ছি, আমাদের প্রতিদিনের কর্মে ও আচরণে অন্তরের ভেতর থেকে সততার চরিত্রের সঠিক ওজন বের করাও কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা অন্তরে দ্বিধা রেখে যেমন ভালো কাজ করতে হতে পারিনা, পাপ আর অপরাধের সাথে মিশেল সৃষ্টি করে পূণ্যের কাজও করা যায়না। আমরা যেন সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে মৃত্যু অবধি অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক রেখেই মৃত্যু বরণ করি এই যেন হই আমাদের জীবনের চির প্রতিজ্ঞা।

“When written in Chinese the word “crisis” is composed of two characters: One represents danger, and the other represents opportunity.”—John F. Kennedy

লেখক: রাজু আহমেদ মোবারক, কলামিস্ট, গবেষক ও সমাজ বিশ্লেষক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Update

বিএফআইইউ এবং আদালতের আদেশ অমান্য করে অবরুদ্ধকর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে হিসাব খোলায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ

সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কোন জিনিসেরই সঠিক ওজন বের করা যায় না

Update Time : 01:18:51 pm, Monday, 26 May 2025

রাজু আহমেদ মোবারক:

1)”Do not sacrifice the future to satisfy the present.”

— Herbert Harris

বায়ুর চাপ পরিমাপের জন্য বিজ্ঞানীরা ব্যারোমিটার ব্যবহার করে থাকেন। শব্দের তীব্রতা মাপার জন্য তারা অডিও মিটার ব্যবহার করেন।কোন জিনিসের ওজন মাপ দিয়ে এর সঠিক ওজন আছে কিনা তা বের করার জন্য প্রথম কথাই হলো যন্ত্রগুলো যেন সঠিক মাপন যন্ত্র হয়। ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আমরা যতই সাধনালব্ধ জ্ঞানে মহত্বর জীবন তৈরিতে প্রাণপণ চেষ্টাই করিনা কেন, সমস্ত কিছু বিলিয়ে দিলেও যদি আমাদের অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক না থাকে, কোন জিনিসেরই সঠিক ওজন আমরা বের করতে পারবনা। জীবনের মাপন যন্ত্র যা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্ব এসব যদি মূল্যবোধের আলোকে অন্তরে

তীব্রভাবে না থাকে, চিন্তার জগৎ থেকে অপরাধ কর্ম করার নেশা আমরা কিছুতেই কমাতে পারিনা। আমরা আমাদের জীবনে কল্যাণকর কাজ করার জন্য সঠিক ওজন বের করতে পারবনা যদি মানুষকে ভালোবাসার প্রাণ অন্তরের চেতনা থেকে অনুভূত না হয়। মানুষের মনুষ্যত্ব ও বিবেক নামক মূল্যবান সম্পদ যদি বিবেকহীন ও মনুষ্যত্বহীন থাকে, নিষ্ঠুরতার মতো কর্মকান্ড পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে স্বাভাবিক হতেও থাকে।। দেখুন না, মানুষই মানুষকে কত কষ্ট দেয়! মানুষই মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে! মানুষই মানুষকে তাদের লোভাতুর ও নিষ্ঠুর প্রাণকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যর্থ হওয়ার কারণে হত্যা করে ফেলে। অন্যের দ্বারা এই কষ্ট পাওয়া ও নির্যাতিত হওয়া মানুষগুলো এসব নির্যাকদের অত্যাচারে, উপদ্রবে, যাতনার তাপে ও চাপে তাদের হাসি মুখগুলো সারাক্ষণই যেন বিবর্ণ আকার ধারণ করে থাকে। মানুষের মুখের হাসি কেড়ে নিয়ে যারাই এই পৃথিবীতে সুখি হতে চায়, সুখের অনুভবে জীবন চালাতে চায়, তাদের মতো কপট মানুষ যেন পৃথিবীতে খুবই বিরল। এই কপট মানুষ যখনই তোমাদের পাশে আসবে, তোমাদের চরিত্র হরণে সার্বক্ষণিক ন্যস্ত হয়ে পড়বে। যারাই সত্য সুন্দরের সন্ধানের জীবনের পথ থেকে সরে যাবে, তাদের অন্তরের মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব সঠিক থাকবে না, কারণ তাদের বিবেকহীন, নিষ্ঠুর মানসিকতার নগ্নতার কারণে অন্তরের সৌন্দর্য্যের ভেতরের অংশ থেকেই তারা রুপহীন হয়ে নানান চরিত্রের রং ধারণ করে। এই পৃথিবীর রং বদলের অন্তরে সৌন্দর্যহারা মানুষগুলো তাদের জীবনে কোন কিছুরই সঠিক ওজন রাখতেও যেমন পারেন না, সঠিক ওজন ঠিক রেখে বন্ঠন পর্যন্তও করতে পারেন না। মানুষের মন যদি সংকীর্ণ হতে হতে সঠিক মাপন যন্ত্রের মূল শক্তির বিকাশ হারিয়ে ফেলে, তারা কখনোই তাদের চরিত্রের রুপ-কাঠামো ধরতেই পারবেনা। সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কোন জিনিসের ওজনই আমরা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারিনা, কারণ আমরা সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে আমাদের জীবনকে জীবনের মর্যাদা দিয়ে বিবেক বুদ্ধির উন্মেষ ঘটিয়ে চালিত করিনা। তুমি যতই অন্তরে সৌন্দর্যহীন মানুষ হবে ততই মানুষের প্রতি ভালোবাসার পরিবর্তে নিষ্ঠুরতার মতো জঘন্যতা তোমার নিজের অন্তরেই বৃহত্তর হতে থাকবে। সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষের যদি তুমি উপকারও করে থাকো তোমার জীবনে, তাদের অন্তরের বিশালত্বের অভাব ও অযোগ্যতার কারণে তারাই একদিন তোমাকে অযোগ্য মানুষ মনে করে দূরে রাখার প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করবে। তারা যে তাদের অতীতের জীবনে সংকীর্ণ পথ প্রান্তের মানুষ ছিলেন, সেসব তাদের মনশ্চক্ষে উদিত হলেও, সংকীর্ণ মানসিকতার কারণে সমস্ত কিছুই তাদের কাছে অতি সামান্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রতিভাত হবে। তোমরা কি জাননা? অযোগ্য মানুষের কল্যাণ সাধন করেও মানুষ মহা বিপদে পড়েন? কারণ, এই অযোগ্য মানুষ তখন তোমারই প্রতিযোগী হয়ে দূরদূরান্ত থেকে দূরন্তপণা মানুষ নিয়ে তোমারই ক্ষতিসাধন করবেন। মানুষের বিবেক বুদ্ধি ও মনুষ্যত্বের শক্তি যদি অন্তরের গভীরতা থেকে হৃদয়কে নাড়া দিতে না পারে, সেই সমস্ত মানুষেরা জীবনে যত কাজই করে থাকুক না কেন, কিছু না কিছু কলহ-বিবাদ ঘটিয়েই সেই সমস্ত কাজগুলো করে থাকেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে। আজকের দুনিয়ায় পরিবারে পরিবারে, সমাজে সমাজে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সম্পর্কহীনতাই ত্বরান্বিত হচ্ছে অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক না রাখার কারণে। আপন মানুষও যেন আপনার কাছ থেকে দূরেই চলে যাচ্ছেন। অন্তরের মাপন যন্ত্রখানি সঠিক না থাকার কারণে মায়া মমতার মতো মূল্যবান উপাদানগুলোও অন্তর থেকে তিরোহিত হচ্ছে। ফলে অমানবিক কাজও যেন স্বাভাবিক হচ্ছে সর্বক্ষেত্রেই। কখনো কখনো আমরা পরিবারছাড়া, দলছাড়া ও গোত্রছাড়া মানুষে পরিণত হয়ে যাই সম্পর্কের মাঝে বাঁধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা না হওয়ার কারণে। আমরা যারাই সম্পর্কে বাঁধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষের সাথে, আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির বিকাশও যেন বাধাগ্রস্তই হচ্ছে। আমরা আমাদের জীবনকে যদি ধারাবাহিক উপলব্ধির শক্তির বিকাশের ওপর ভর না করাতে পারি, আমরাই আমাদের সুন্দর চরিত্র গঠনের মূল শক্তি থেকেও নীরস প্রাণের মানুষে পরিণত হয়ে যেতে পারি। কোন সুন্দর জিনিসই যদি তোমার সুন্দর প্রাণ পরশে এসে আপন গতিতে স্হান করে নিতে না পারে, তুমি কিছুতেই পরের জন্য প্রিয় মানুষ হবে না, কারণ তুমি তোমার সঠিক মাপন যন্ত্রের বিবেক ও মনুষ্যত্বের মতো শ্রেষ্ঠ সম্পদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কোন চেষ্টাই তুমি করোনি। কারণ, সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে জীবন পরিচালিত করে অন্তরের মাপন যন্ত্রখানি সঠিক রাখার

কোন সিদ্ধান্তই তুমি জীবনে গ্রহণ করোনি।

2) “Nobody makes a greater mistake than he who did nothing because could only do a little.”— Edmund Burke

বুদ্ধিমান মানুষেরা জীবন চলার পথে অনেক কিছুতেই ধুম্রজাল পরিস্থিতির মধ্যেও পড়েন, কিন্তু চিন্তা চেতনায় অতি শিক্ষিত পন্ডিত মানুষ হওয়ার জন্য দিবারাত চিন্তা ব্যয় করে পরিশেষে প্রতি কথা ও কর্মে নিজেকে মূল্যহীন পরিচয়ে পরিচয় দিয়েও থাকেন, তা-ই তখন আমাদের কাছে দুঃখের ও অসন্মানের হয়ে পড়ে। আমরা শিক্ষিত পন্ডিত মানুষ হয়ে যদি নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করে না চলতে পারি, “শিক্ষা” নামে যে শব্দটি আছে, সেই শিক্ষা শব্দটিরও মর্যাদা আমরা হেয় করেও চলি। আমরা আমাদের সুন্দর জীবনের প্রয়োজনেই সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে সঠিক মাপন যন্ত্রের দিকেও মনোযোগ আকর্ষণ করি। আপনারা যারাই চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ-হত্যাকান্ড এসব নিষ্ঠুর কর্মকান্ডের সাথে নিজেদেরকে নীরবে বা প্রকাশ্যে সংশ্লিষ্ট করে রাখেন,

অন্তরের সঠিক মাপন যন্ত্রখানির দিকে একটুও যদি দৃষ্টিদান করে চলেন, কিছুই না কিছু অপরাধ ও পাপ কর্ম কম করারও প্রাণ পাবেন।

আপনি আজ থেকেই আপনার অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক রাখার জন্য অভ্যেসে মনোযোগ প্রদর্শন করুন, শেষ বয়সে পাপের বোঝাটা এত ভারি মনে হবেনা! আমাদের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা যত কিছুই করি আমরা যেন জীবনের মর্যাদা রক্ষা করে চলি। আমরা আমাদের চলন্ত জীবনে যদি বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের শক্তির ওপর দন্ডায়মান না হতে পারি, আমরা কিছুতেই আমাদের নিজেদের জীবনের সঠিক মাপন যন্ত্রটি পর্যন্ত যত্ন করে সংরক্ষণ করে রাখতে পারিনা। আমরা মনুষ্যত্ব ও বিবেকের উৎকর্ষতার কথা সর্বসময়ই বলে থাকি, কিন্তু তা যেন আমাদের অন্তরের গভীরতা থেকে বেরও হয়ে আসে। আপনার-আমার অন্তরের সৌন্দর্য রক্ষিত করার জন্য যাতে আমাদের দ্বারা মানুষ অপমানিত না হয়। আমাদের নিজেদের সুন্দর জীবনের মর্যাদা রক্ষা করে চলার জন্য অন্তরের গভীরতা থেকে মর্যাদা রক্ষার কোন ধারণাই না থাকে, আমরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সন্মানিত মানুষ হই কেমন করে? আমরা যদি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সন্মানিত মানুষও হতে চাই তাহলে এই একটা কাজ যেন

সর্বসময়ই করি। আর সেটা হলো গৃহের সৌন্দর্য-রুপ-ঐশ্বর্যের মর্যাদা রক্ষা করে চলার জন্য দিবারাত উদ্যানের যত্নের মতোই পরিপূর্ণ মন নিয়ে যত্ন করে যাই। আপনার-আমার উদ্যান যদি নিয়মিত পরিচর্যা না করি, একটা সময়ে দেখা যাবে আমাদের সমস্ত উদ্যান আগাছায় ভরে গিয়ে জীর্ণ-মলিন হয়ে পচে গেছে। আমাদের পরিবার নামক সুন্দর বাগনানটি যেন অযত্ন, অবহেলায় বাগানের আগাছার মতো কিছুতেই জীর্ণ ও মলিন না হয়ে যায়। এই পৃথিবীতে যত প্রকার প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা মানুষের কল্যাণে আসে, সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠানই হলো আমাদের পরিবার। চলুন, আমরা পরিবারের যত্ন করি এবং পৃথিবীতে ভালো মানুষ তৈরি করি। যাতে ধর্মনীতি-রাজনীতি-অর্থনীতি-সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রভাব প্রতিপত্তি সৃষ্টিতে আমরা কখনোই মানুষকে হত্যা না করি। তোমার বিবেক বুদ্ধি মনুষ্যত্বের শক্তির বিকাশের যদি অভাব থাকে, তুমি কখনোই তোমার অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিকভাবেও কাজ করবেনা, কারণ তুমিও এই পৃথিবীর একজন বিবেকশূন্য মানুষ। আমরা যদি আমাদের পরিবারের যত্ন না করি এর মর্যাদা রক্ষার জন্য। এই পারিবারিক সুন্দর বাগান থেকেও চোর-ডাকাত-

দুর্নীতিপরায়ণ এমন কি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নিয়োজিত হয়ে মূর্খ মানুষও বেড়ে গিয়ে বের হতে পারে। আপনারা হয় তো বলতে পারেন বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন জাতির মাঝে যুদ্ধবিগ্রহের মাধ্যমে মানুষের মৃত্যু, দেশ দখল সবই প্রভাবশালী শিক্ষিত মানুষেরই কাজ। সুতরাং ওরা মূর্খ মানুষ হতেই পারেনা? আপনারা কি জানেন?”এরা মূর্খদের মূর্খ বলেই মানুষ হত্যা করেন! দেশ দখল করে সারা পৃথিবীকে অবাসযোগ্য করে রাখাই তাদের কাজ। তাদের কর্মকান্ডের চরম কদর্যতার চিত্র সকল স্হানের, সকল দেশের মানুষেরা দেখেই চলছেন। তারা তাদের খারাপ কাজে অন্তরে ঘৃণা ও অপমানবোধ করেন না বলেই সঠিক মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব এসব মূল্যবান উপাদানগুলোর মূল্যই হৃদয়ের অনুভূতিতে অনুভব করতে পারেননা, কারণ আপনার-আমার অন্তর থেকে যদি অন্যকে বাতিদান করার মতো বিবেক ও মনুষ্যত্বের চেতনা বোধের মতো চমৎকার অনুভূতি অন্তর থেকে বাহিরে না আসে অন্যদের দুঃখ দেখে, আমি-আপনি কেউই অন্যের জীবনে বাতিদান করতে পারবনা। যারা ধর্মকর্ম ও পূণ্যের কাজ করার পরও অন্তর থেকে যে বিবেকবোধ ও মনুষ্যত্বের মতো শ্রেষ্ঠ অনুভূতিবোধ সৃষ্টি হয়, তা যদি অন্তরে ধরে রেখে অপরাধ কর্ম প্রতিরোধ করার প্রাণ তৈরি না করেন তারাই নির্মম, পাষাণ ও নিষ্ঠুর। আমার-আপনার অন্তরের ভেতর যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে জীবন চালিত করার বোধশক্তি না থাকে, আমরা কখনোই বিবেকবান ও মনুষ্যত্বের বিকাশে সঠিক মাপন যন্ত্র সেটির সম্পর্কেও ধারণা পোষণ করা দূরহ হয়ে পড়বে। তোমার অন্তরে যদি অপরের ধন-সম্পদ লুন্ঠন করে নিজের ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে সমাজ ও রাষ্ট্রের বৃহত্তর শক্তির দাপটে আতংক সৃষ্টিকারী মানুষ হতে চাও, তোমার লোভ লালসার নগ্নতার রুপটি তোমার ছোট্ট জিহ্বাকে অগ্নিস্ফুলিংগের মতো অগ্নিজিহ্বায় রুপান্তরিত করবে, কারণ মানুষের মনুষত্ব ও বিবেক যদি নিষ্ঠুরতার চরমে পৌঁছে যায় হৃদয়ের অগ্নিস্ফুলিংগের কারণে,

এই ছোট্ট অর্গান জিহ্বাহও লোভ-লালসায় নিমজ্জিত হয়ে অগ্নিজিহ্বাতে রুপ লাভ করে। আমাদের অগ্নিজিহ্বা সারা পৃথিবীকেও নাড়া দিতে পারে। কোন ধর্ম গ্রন্থের শাস্ত্রীয় কথাবার্তা যদি তোমাকে

অনুমোদন দিয়ে থাকে যে, মানুষের কোন আচরণ ও চিন্তা যদি শাস্ত্র বিরোধীও হয়ে থাকে, আর এই জন্য তাদের হত্যা করে জান্নাতে যেতে পারবে। আর তা যদি বিশ্বাসও করে থাকো তোমার মতো বোকা ও

অপদার্থ মানুষটি কোটি বছরে একটিও খোঁজে পাওয়া ভার হবে, কারণ আমাদের সৃষ্টিকর্তা কারো দ্বারা সৃষ্ট হত্যাযজ্ঞের রক্তপ্রবাহ দেখতে চাননা! এই অগ্নিস্ফুলিংগের অগ্নিসংযোগ যেমন মাটি-গাছ, পাহাড়-পর্বত, নদী-সাগর সমস্ত কিছুইকে ধ্বংস করে দিতে পারে নিমেষের মধ্যেই। ঠিক তেমনইভাবে অগ্নিজিহ্বার শক্তিও সমগ্র বিশ্বের মানুষকেও চিন্তা চেতনায় বিচ্ছিন্ন করে বড় ক্ষতিসাধনও করতে পারে। আমরা যখনই কোন কথা বলি, আমাদের জিহ্বা যেন অগ্নিসংযোগ করার মতো অগ্নিজিহ্বাতে পরিণত না হয়। আমাদের মূল্যবান এই অর্গানটি যারাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি, অনেক ক্ষেত্রেই আপন মানুষের আপন প্রাণ পুড়ে ছাইও হয়ে যেতে পারে। আমরা বাহিরের মানুষের অগ্নিজিহ্বায় যতটা না কষ্ট পাই এবং সেই কষ্ট থেকে যাতনা পেয়ে যে ক্ষতিগ্রস্ত হই, আপন মানুষের অগ্নিজিহ্বার আঘাত পেয়ে তার চেয়েও বেশি দুঃখাতুর ও ব্যথাতুর প্রাণের মানুষ হই।

3) “Success is a number game. The more you call, the more likely you are to get a yes.”— Roi Tauer

তুমিই বল তুমি সৎ মানুষ না কী অসৎ মানুষ তোমার জন্মে? কোন সত্য ঘটনা বা বিষয়কে তুমি সত্য হিসেবে জানার পরও যদি তুমি সেই সত্যকে সত্য বা সেই ঘটনাকে সত্য ঘটনা হিসেবে মেনে নিতে না চাও, তখনই তুমি অসৎ মানুষ হিসেবে তোমার চরিত্রের রুপ-কাঠামো প্রকাশ করে গেলে এই পৃথিবীতে। পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে মূল্যবোধের একটি অধিকার থাকে। তাও বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির শক্তি থেকে নিখুঁতভাবেই বের হয়ে আসে পরস্পর পরস্পরের মধ্যে প্রাণের সম্পর্ক থাকার কারণে। যাকে তোমার ভালোবাসা ও প্রাণের টানে প্রেমদীপ্ত হৃদয়ে ভালো না লাগে, পরস্পর পরস্পরের মাঝে অনুভূতির টানে অধিকারের চাহিদাও হ্রাস পেতে থাকে। সংসারেই হোক, সমাজেই হোক পরস্পরের সম্পর্কের মাঝে যদি মধুরতার বন্ধন তৈরি না হয় হৃদয়ের পরম ভালোবাসার প্রাণে, তখন পরস্পরে খাঁটি অধিকার প্রতিষ্ঠা পায় না। তোমার-আমার ঘর সংসারেও স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্তদির মাঝে পরস্পর পরস্পরের মাঝে স্বাভাবিক অধিকার থাকে। সেটিও যদি মর্যাদা রক্ষার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরে হৃদয়ের ঘাটতি থাকে, মুখের ও

হৃদয়ের প্রসন্নতায় সমস্ত ঘর আনন্দে ভরে উঠেনা। আমরা আমাদের মনকে যদি সত্য বলয়ের স্থিরকৃত স্হানে না রাখার চেষ্টা করি, আমরা যেন ভাঙ্গাচোরা প্রাণের অস্থির প্রাণের মানুষ হয়ে থাকি। এই অস্থির প্রাণের মানুষেরাই সমাজের মায়া ছেড়ে দিয়ে নিজেদের মায়া করতে গিয়ে পুরো সমাজের চলনসই পথটাকেও অচল করে ফেলেন, কারণ তারা সমাজের উন্নতির মায়া ছেড়ে স্বার্থপর মানুষে পরিণত হয়ে যান।

তাদের নষ্টতার চরিত্রই সমাজ ও রাষ্ট্রকে তখন ভঙ্গুরতার দিকেই ধাবিত করে। সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কোন জিনিসেরই সঠিক ওজন যেমন

বের করা যায় না তা যেমন সত্যি, সত্যের দৃঢ়তা ছাড়া সত্য পথে মনও রাখা যায় না। সত্য পথে আরোহণে তুমি তোমার জীবনকে চলমান রাখার জন্য অন্তরের যত্নের কোনই ঘাটতি যেন না ঘটে। আমরা যদি সুরা সেবন করে সুরা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকি, সেই নেশাগ্রস্ততার প্রভাবে যদি চৈতন্যহারা মানুষে পরিণত হয়ে যাই, সেই নেশার ঘোর না কাটা পর্যন্ত শরীরের আসল চেতনাবোধটিই বা কি তা আমরা কখনো ঠাহরও পাইনা। ঠিক তেমনইভাবে আমরা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের মূল শক্তি থেকে বিচ্যুত হয়ে এর নিখুঁত রুপটি ধূসর বর্ণে পরিণত করি, তখনই আমরা আমাদের অন্তরের মাপন যন্ত্রখানিও নষ্ট করে ফেলি। তুমি যদি মানবিক চিত্তের মানুষ না হও, তোমার অন্তরে দুঃখে থাকা মানুষের প্রতি দুঃখাতুর প্রাণের সঞ্চার হবে না, কারণ পরের জন্য দুঃখ পেয়ে ব্যথাতুর প্রাণের অনুভূতি তোমার অপরাধ কর্মে তা নষ্ট করে ফেলেছে। সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া কিছুতেই যেমন কোন জিনিসের সঠিক ওজন নির্নায়ণ করতে চাইলেও আমরা করতে পারিনা। ঠিক তেমনই তোমার দান করার হৃদয়ের পরিসর বড় না করে, তুমি কাউকে কিছু দান করার উৎসাহিত শক্তি উৎসারিত করতে পারবেনা হাতে তুলে দান করার জন্য। চোখের জ্যোতিও প্রখর করা যায় না যদি পরকে সেবাদানে তুমি অন্তরে সঠিক মানুষ না থাকো। আমরা আমাদের হাত ও চোখ দুইটিকে ঠিক করার আগে যেন আমাদের ভেতরের মাপন যন্ত্র অন্তরকে ঠিক করে নিয়ন্ত্রণে রাখি, কারণ তোমার-আমার অন্তর যদি নিয়ন্ত্রণহীন থাকে, এই অন্তর ভালো কিছু করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেনা। তোমার অন্তরে যদি হৃদয়ের বোঝাপড়া হৃদয়ে না থাকে, তোমার হৃদয়ের বোঝাপড়ার প্রাণ থেকে মহা অনুভূতির প্রাণ সৃষ্টি

হবেনা অন্যের দুঃখ দেখেও, কারণ তোমার হৃদয়ে তুমি নিজেই বিষাক্ত জিনিস স্তুপীকৃত করে তালাবন্ধ করেছো। তোমরা যদি সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীর দিকে তোমাদের অন্তহৃদয়ে তাকাতে পারো, তোমাদের পবিত্র হৃদয় খুলে দেখতে পাবে কোথাও না কোথাও এই বিষাক্ত মানুষের বিষাক্ত হৃদয়ের বিস্ফোরণ হয়েই চলছে। জখম হাত ও যখম চোখ দিয়ে কোন জিনিস ঠিক মতো ধরা ও দেখা যায় না। যখম হৃদয়ে তুমি মানুষের কল্যাণে কোন কিছুই করতে সক্ষম হবে না। আমরা মানুষ হয়ে যদি মানুষের মর্যাদা দিয়ে আমাদের জীবন পরিচালিত না করে চলি, এই আমাদের হৃদয়ে নেশাগ্রস্ত লোকজনদের মতোই নেশার ঘোর ধরে হৃদয়কে ভারী করে রাখে। ফলে সেসব হৃদয়ে আমরা মানবিক কোন কাজই করতে পারিনা। সত্যকে আমাদের অন্তরে আপন গতিতে চলার জন্য হৃদয়ানুভূতির প্রাণ সঞ্চারণের মাপন যন্ত্র না থাকে, আমরা কেমন করে ন্যায় অন্যায়ের বিচার্যের সত্য পথের মূল ধারাতে থাকি? এসব চরিত্রহীন নিষ্ঠুর মানুষের দ্বারা সংঘটিত যারা সর্বস্ব হারিয়ে যাতনার ভারে আর্তনাদ ও আর্তচিৎকার করে অশ্রুপ্লাবিত করেন তাদের পবিত্র মুখমন্ডল আমাদের বিবেক শূন্যতার কারণে। এই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য যদি আপনার-আমার অন্তরের দাড়ি-পাল্লার মতো মূল্যবান সঠিক মাপন যন্ত্রটিকে জীবনে সত্য পথে চলার জন্য সঠিক মাপন যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত করে না চলি, একদিন হয় তো দেখা যাবে আমরা যেন শুধুই এই পৃথিবীতে অকর্মণ্য মানুষ হিসেবে হাঁটা-চলাফেরা করে সময় ব্যয় করে গেলাম কিছু সমমনা মানুষের সাথে, কিন্তু জীবনকে জীবনের মর্যাদার আলোকে উপলব্ধিটুকু যেন করা হলো না অন্তরের সৌন্দর্যের স্বরূপকে ধারণ করে! আমরা যখনই অন্তরের চেতনার শক্তি থেকে বিলুপ্ত হয়ে চিন্তায় অপরাধ কর্মের সাথে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে সম্পৃক্ত হয়ে কেবলই চেতনায় অন্ধকারের দিকে যেতে থাকি, শতশত বা হাজার হাজার বার অপরাধ কর্ম সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীতে সংঘটিত হতে থাকলেও আমরা আমাদের চোখ ও হৃদয় খুলে দেখতেও চাই না। এমন কি ঘটনার আসল ঘটনা কি তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতেও চাই না, কারণ কখনো কখনো অন্যায়-অপরাধ-পাপ কর্মও আমরা নানা অজুহাতে মেনে নিয়েও চলি। আমরা যদি সত্য পথে আমাদের মনটি রাখি, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কথাও বলতে শিখি।

4)”Children are likely to live up to what you believe in them.”

— Lady Bird Johnson

সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে যে জীবন সেই জীবনই একমাত্র মানবিক জীবন হতে পারে, কারণ সত্যনিষ্ঠ ও সত্যান্বেষী মানুষ যদি তুমি না হতে পারো, তোমার দ্বারা তোমার ভেতর থেকে অন্তরের চোখ খোলা সম্ভব নয়। আমরা ধর্মকর্মের সাধনা দ্বারা যতই পরকালের সর্বোচ্চ মর্যাদার স্হানে আসীন হতে চাই না কেন, হৃদয়ের পরিসর বড় না করে অন্তরে তীব্র চেতনা জাগ্রত হয় না মানুষকে ভালোবাসার জন্য। তুমি-আমি কেউই মানুষের সর্বনাশ করে তাদেরকে অন্ধকার পথে নামিয়ে দিয়ে এবং তাদের বাতিদানের আলোকিত ঘর অন্ধকার করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়া সর্বোচ্চ স্হানে সমাসীন হওয়া কিছুতেই যে সম্ভব হবে না তা আমাদের বিবেক বার বারই বলে দিয়ে যাচ্ছে। তোমার কোন ধর্মগ্রন্থও যদি বলে দেয় যে, মানুষকে রক্তাক্ত ও হত্যা করে পরকালে জান্নাতে যাওয়া যাবে, সেসব ধর্মগ্রন্থ পৃথিবীর মানুষের শান্তি নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে ভালো কাজ না করি, সঠিক মাপন যন্ত্র অন্তরে অন্তরিত করে, আমাদের চিরজনমের সাধনা শূন্যতায় নিক্ষিপ্ত করে আমরা যেন অজানা দূরত্বে যেতে যেতে শুধুই পাপ সঞ্চয় করে দুর্বল মানুষে যেনই পরিণত হলাম। তোমরা যখনই অন্যের বাড়িঘর নষ্ট করে তোমার নিজের ঘরে আলো জ্বালাবে, সেই আলোও একদিন তোমাদের সমস্তের হৃদয়কে পুড়ে ছাই করে ছাড়বে, কারণ শক্তির ধর্মানুসারে তুমি যা করবে যেভাবে, সেই রুপে সরাসরি না হোক, অন্য কোন রুপে, অন্য কোন শক্তিতে হলেও তোমাকে এসে সেই আঘাতটা করবে। সেই আঘাতের অপশক্তি তোমারই দ্বারা সৃষ্ট বলেই, তোমার সৃষ্টির শক্তি তোমাকেই অনুসরণ করবে তোমার অনুসারী হিসেবে। এই স্বল্প সময়ের জীবনে যদি আমরা মানুষ হিসেবে জীবনের মাপন যন্ত্রটি সঠিক না করে পাপ, অপরাধ, লোভ-লালসা আর নিষ্ঠুর কর্মকান্ড করে অমানবিক ও পচনশীল সংক্রমণ রোগীর মতো মানুষ হয়ে যাই, যেখানে মানুষ আমাদের স্পর্শ পেতেও তাদের অন্তরে স্পষ্টভাবে ভয়ের সঞ্চার হতে থাকে। সেটাই আপনার-আমার জীবনে ভারী নিঃশ্বাসে পরিণত করে জীবনের মূল্যবান সৌন্দর্য হরণও করতে

পারে। আমরা যখনই অন্তরের চোখ খুলে খুলে জীবন চালিত করে চলি, আমাদের অন্তরের সঠিক মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব সঠিক স্হানে বসানো সম্ভব হবে। আমরা যদি আমাদের অন্তরের বোধশক্তিকে বিকশিত করতে না পারি, আমাদের সঠিক মাপন যন্ত্রখানিও বোধের চেতনাকে অনুভব করতে পারে না, কারণ আমরা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির বিকাশ যদি অন্তরে অহরহ বিরাজমান না থাকে, সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীতে নিষ্ঠুর কর্মকান্ড সংঘটিত হতে থাকলেও আপনার-আমার মাপন যন্ত্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব অন্তরে অগ্নিস্ফুলিংগের মতো আপনা থেকে বিস্ফোরিত হবে না। একটি কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, আমরা যদি কোন বিষয় বা কোন জিনিস না জানি, সেই অজ্ঞতার বেড়াজালে নানা অসঙ্গতি ও নানা ধরনের অমূলক ক্ষতিকর জিনিস ভেতরে ভেতরে রয়ে যায়। তা কিন্তু জানার আগ্রহ না থাকার কারণে আর জানা যায় না। যে জিনিস আমরা জানতে পারি না, সেই অজানা বিষয়ের খারাপ প্রভাব থেকে আমরা মুক্তিও পাই না। যে কোন জিনিস জানার মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের জীবনে মানসিক শক্তি বৃহত্তর করে সমাজ ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হয়ে থাকি। কিন্তু আমরা আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের চেতনায় যদি নিজেদেরকে উর্ধ্বে স্থানান্তরিত না করি, আমাদের জীবনে যা কিছুই আমরা অর্জন করি সঠিক মাপন যন্ত্র ছাড়া, আমাদের চিন্তা যে দিকে খুশি সে দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে কোথাও আমরা খাঁটি মানুষটিও হতে পারিনি। যুগে যুগে পৃথিবীতে মানুষই মানুষের ক্ষতিসাধন করে মূর্খতা ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে, এখনও দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের প্রতি মানুষের নির্মম নিষ্ঠুরতা, অবহেলা, রক্তাক্ত যুদ্ধে মানুষের রক্তে রক্তাগঙ্গা বয়ে গেলেও, সেই রক্তের উপর দিয়ে হেঁটে গেলেও, তাদের চোখের জলেও তাদের কোন দয়া মায়া নেই। এরা যে জাতি গোষ্ঠীর মানুষই হোক এরাই নিষ্ঠুর ও পাপী। এই বিধাতার রাজ্যে যারা তোমাদের ঘরের আলো নিভিয়ে দিয়ে তোমাদেরকে অন্ধকার ঘরে রাখে। যারা তোমাদের ঘরের আলো নিভিয়ে তাদের ঘরে আলোকরশ্নির বিচ্ছুরণ ঘটায়, বিধাতার কাছে তোমরা কি একটু নালিশ করে বলতে পারো না ওরা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মানুষ? তাদেরকে কোন্ কথাটি বলে বিধাতাকে বুঝাতে পারবে যে এরা পৃথিবীর নিষ্ঠুর মানুষ? আমাদের বিধাতার কথা কেউ এখন আর শুনেন না! অধিকাংশ মানুষই যেন বিবেক ও মনুষ্যত্ব নামে মহত্বর

উপাদানগুলো অন্তর থেকে চিরতরেই বিদায় করার প্রতিযোগিতায় আছেন, কারণ বিবেক বুদ্ধি ও মনুষ্যত্বের বিকাশ অন্তরে বাঁচিয়ে রেখে অপরাধ কর্ম আর পাপ কাজ করাই যায় না! যারাই নিষ্ঠুরতার মাঝে জীবনকে সম্পৃক্ত রেখে লাখ-কোটি বার মসজিদ-মন্দির-চার্চ-পেগুডায় গিয়ে পূণ্যলাভে সময়াক্রান্ত করলেও আমার-আপনার সন্তানদের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত শরীরের বিভস্ব চিত্র চোখের জলে আমাদের বুক ভেসে যাচ্ছে। তোমাদের অন্তরে কি এতটুকু সংশয়ী

মানসিকতা উদ্রেক হয় না যে, পাষাণ হৃদয়ের মানুষেরা যারা চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ আর মানুষ হত্যা করে ধর্মালয়ের ধর্মাশ্রমে নিয়োজিত থাকলেও কোন পূণ্যের স্পর্শ এই পাপী অপরাধীদের অন্তরে সৃষ্টিকর্তা পৌঁছাবেন না? আমরা সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে যদি সঠিক মাপন যন্ত্রের নিরক্ষণে বিবেক ও মনুষ্যত্বের বিকাশের শক্তির দ্বারা ভালো

মানুষ না হচ্ছি, আমাদের প্রতিদিনের কর্মে ও আচরণে অন্তরের ভেতর থেকে সততার চরিত্রের সঠিক ওজন বের করাও কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা অন্তরে দ্বিধা রেখে যেমন ভালো কাজ করতে হতে পারিনা, পাপ আর অপরাধের সাথে মিশেল সৃষ্টি করে পূণ্যের কাজও করা যায়না। আমরা যেন সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে মৃত্যু অবধি অন্তরের মাপন যন্ত্রটি সঠিক রেখেই মৃত্যু বরণ করি এই যেন হই আমাদের জীবনের চির প্রতিজ্ঞা।

“When written in Chinese the word “crisis” is composed of two characters: One represents danger, and the other represents opportunity.”—John F. Kennedy

লেখক: রাজু আহমেদ মোবারক, কলামিস্ট, গবেষক ও সমাজ বিশ্লেষক।